কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ওয়াহিদুজ্জামান অর্ক
কুষ্টিয়ায় করোনা নতুন সনাক্ত রোগী মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল আরেফিন সহ বিভিন্ন পেশাজীবির ৩০ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে আজ পরীক্ষার জন্য ৪৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
গতকাল ২৮ এপ্রিল, ২০২০ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসন, কুষ্টিয়া ও কুষ্টিয়া জেলায় ৬ টি উপজেলার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ মোট ১২ টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে ১৯ টি মামলায় ১৯ জনকে ৮৫,৪০০ টাকার অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৮৮ ও ২৬৯ এবং সক্রামক রোগ (নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরোধ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ২৪(১)(২) ধারায় ১৫ টি মামলায় ৮৪,৪০০ টাকার অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৪০ ধারায় ২ টি মামলা ১,০০০ টাকার অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
এছাড়া দ্রব্যেমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মজুদ রোধ এবং করোনা আক্রান্তদের বাড়ি লক ডাউন ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুর ফেরত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য গ্রাম পুলিশ/আনসার নিয়োগ করা হয় এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা কালে জন সাধারণের মাঝে করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
জন স্বার্থে মোবাইল কোর্টের এ অভিযান অব্যাহত থাকার পরেও বৃহত্তম পোড়াদহ কাপড়ের হাটে ক্লপসিবল গেট আটকে ব্যবসা চলছে।কুষ্টিয়ার পোড়াদহে মানা হচ্ছে না করোনার বিধিনিষেধ। মানুষকে ঘরে রাখতে ও গণজমায়েত এড়াতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে দোকান মার্কেট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এ নির্দেশ না মেনে একটু কৌশল পরিবর্তন করে পুরোদমে ব্যবসা চালাচ্ছে পোড়াদহের কিছু ব্যবসায়ীরা। বাজার কমিটিসহ যাদের বিষয়টি দেখার কথা তারাই উল্টো সহযোগীতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় আগের মতই চলছে নামকরা এই কাপুড়ের হাট। মার্কেটের কলাপসিপল গেট টেনে লাগানোর মত করে রাখা হয়েছে। দোকানের সার্টারে চোখ দিলে দেখা যায় সবগুলো তালা খোলা। সংখ্যায় কম হলেও আগের মতই দূর দূরান্তের ব্যবসায়ীরা আসছেন। তারা অনায়াসে ঢুকে পড়ছেন মার্কেটে, টোকা দিলেই উঠে যাচ্ছে সার্টার। ভেতরে ঢুকে ইচ্ছেমত মাল নিয়ে আবার কোন বাধা ছাড়াই বেরিয়ে নিজ গন্তব্যে চলে যাচ্ছেন।এতে করে করোনার ঝুকি বাড়ছে। আতংকিত মানুষরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে এই এলাকায় করোনার মহামারি হতে পারে। এখনই পোড়াদহ বাজারের ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রন জরুরী হয়ে পড়েছে।এদিকে, অনেক দোকানী দোকানের মাল বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে বিক্রি করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। পোড়াহদ বাজার ঘেষা কাটদহ গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে বাজার বসছে বলে জানা গেছে।কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, কি করব, দূরের ব্যবসায়ীরা ফোন করেন, আমি মাল না দিলে আরেক জনের কাছ থেকে নেবে। এভাবে আমার কাষ্টমার নষ্ট হবে। তাই সবাই এভাবেই দোকান চালাচ্ছে। এতে বাজার কমিটিও সহযোগীতা করছে বলে জানান তারা। এ জন্য বাজার কমিটির নেতাদেরও কিছু দিতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বললেন, বাজারের ইজারাদারের লোকজন নিয়মিত টাকা আদায় করছে। দোকান খুললেই তাদের টাকা দিতে হচ্ছে। কিছু লোকজন পয়েন্টে পয়েন্ট খাজনা আদায়কারীরা দাড়িয়ে থাকছে, মাল কিনে নিয়ে যাবার সময় দূরের ব্যবসায়ীদের দাড় করাচ্ছে। কোন দোকান থেকে মাল কিনেছে শুনে সেই দোকানদারের ফোন করছে। টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করলেই সেই ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।এসব বিষয়ে পোড়াদহ বাজার বনিক সমিতির ছেলে ও বস্ত্র বিতান মালিক সমিতির সভাপতি মাসুম বলেন, টাকা পয়সা নেওয়া হচ্ছে না। সবাই ব্যবসা করছে কিভাবে ঠেকাবো। সবারই বাল বাচ্চা আছে, করোনার সময় সবারই ভয় আছে, আমাদের পক্ষে এসব ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয় আহম্মেদপুর পুলিশ ক্যাম্পের আইসি লিখন জানান, তার ক্যাম্পে জনবল সংকট। এজন্য আনছার সদস্য নিয়ে ক্যাম্প চালাচ্ছি। পোড়াদহ বাজার থেকে পুলিশ কোন অর্থ নিচ্ছেনা বলে দাবী করে তিনি বলেন, এই জনবল নিয়ে এতবড় বাজার নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হচ্ছে না।